আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গণহত্যা মামলার বিচারকাজ শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ট্রাইব্যুনালে বিচারকাজ শুরু হয়।
বিচারের অংশ হিসেবে গণহত্যা ঘিরে শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাইবে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিম। সেই সঙ্গে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদেরও ট্রাইব্যুনালে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
গত ১৪ অক্টোবর হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারকে চেয়ারম্যান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। যেখানে ট্রাইব্যুনালের দুইজন সদস্যও রয়েছেন। তারা হলেন- হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এছাড়া প্রসিকিউশন টিমের অপর পাঁচ প্রসিকিউটররা হলেন- মো. মিজানুল ইসলাম, গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ, আবদুল্লাহ আল নোমান ও মো. সাইমুম রেজা তালুকদার।
এদিকে ১০ জন কর্মকর্তার সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা পুনর্গঠন করা হয়েছে। যেখানে তদন্ত সংস্থার কোঅর্ডিনেটর পদে মো. মাজহারুল হককে (অ্যাডিশনাল ডিআইজি, অবসরপ্রাপ্ত) এবং কো-কোঅর্ডিনেটর পদে মুহাম্মদ শহিদুল্যাহ চৌধুরীকে (পুলিশ সুপার, অবসরপ্রাপ্ত) নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া তদন্ত সংস্থার অপর কর্মকর্তারা হলেন- মো. আলমগীর (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, অ্যান্টিটেররিজম ইউনিট ঢাকা), মোহা. মনিরুল ইসলাম (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, পিবিআই হেডকোয়ার্টার্স), মো. জানে আলম (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, ঢাকা), সৈয়দ আবদুর রউফ (সহকারী পুলিশ সুপার, ট্র্যাফিক অ্যান্ড ড্রাইভিং স্কুল, ঢাকা), মো. ইউনুছ (পুলিশ পরিদর্শক-নিরস্ত্র, সিআইডি), মো. মাসুদ পারভেজ (পুলিশ পরিদর্শক-নিরস্ত্র, চারঘাট মডেল থানা, রাজশাহী), মুহাম্মদ আলমগীর সরকার (পুলিশ পরিদর্শক-নিরস্ত্র, আরআরএফ-ঢাকা) ও মো. মশিউর রহমান (পুলিশ পরিদর্শক-নিরস্ত্র, সিআইডি, ঢাকা মেট্রো-উত্তর)।
যে ট্রাইব্যুনালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হয়েছে, সেখানেই ২৪’র গণঅভ্যুত্থান দমনে চালানো নিপীড়ন ও হত্যাযজ্ঞের বিচার শুরু হলো। যেখানে মূল আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ তার সহযোগীরা।
এদিকে, দ্রুততম সময়ে বিতর্কমুক্ত একটি বিচারকাজ সম্পন্ন করতে আশাবাদী ট্রাইব্যুনালের নতুন প্রসিকিউশন টিম। কিন্তু, সাক্ষীদের নিরাপত্তা, ভুক্তভোগীর ক্ষতিপূরণ আইন এবং রাজনৈতিক দলকে সাজা দেওয়ার এখতিয়ারের যে সংশোধনীর কথা বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিতে তার কতোটা হয়- সেটি বোঝা যাবে অধ্যাদেশ জারির পর।
আইনজ্ঞদের অভিমত, আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন- ১৯৭৩-এর ২৬টি ধারার ৩ নম্বর জুরিসডিকশনে অপরাধের যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, যেগুলোর সাথে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের নির্যাতনের মিল রয়েছে।
Add Comment