শিক্ষা

হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল ::আলহাজ্ব লায়ন ড. মোজাহেদুল ইসলাম মুজাহিদ

হাতের লেখা সুন্দর হওয়া খুব বড় একটি গুণ। এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে আমরা পৌছাতে পারিনা। কিন্তু, আমাদের হাতের লেখা ঠিক পৌছে যাচ্ছে। তাই, সকলের নিজের হাতের লেখাকে আরও সুন্দর করে তোলা এবং সেই সাথে হাতে লেখা সুন্দর করার উপর যতœবান হওয়া। পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায় সাথে বৈজ্ঞানিক কৌশল। হাতের লিখা সুন্দর করতে কে না চায়। তাই আজ আমি নিয়ে এসেছি কিছু কৌশল যার মাধ্যনে আপনি আপনার হাতের লেখা সুন্দর করতে পারবেন। তাই দেরি না করে জেনে আসি হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল সমূহ :

১. আল্লাহর নামে শুরু করা :
আল্লাহ রহমাতাল্লিল আমিন। অবশ্যই আল্লাহর নামে লেখা শুরু করবে। যে কলমে কিংবা পেপারে লেখা স্বাচ্ছন্দবোধ করো, লেখার ক্ষেত্রে সেই কলম কিংবা পেপার ব্যবহার করা উচিত। তাহলে হাতের লেখা ভালো লাগবে সেই সাথে লেখা সুন্দর হবে। সবসময় উপযুক্ত স্থান যেমন চেয়ার কিংবা টেবিলে বসে লেখার অভ্যাস করুন। কারণ, যখন আপনি চেয়ার টেবিল ছাড়া শুয়ে বসে লেখবেন আপনার লেখার অবস্থাও খারাপ হবে।

২. কাটাকাটি না করা :
প্রথম লেখাটি যদিও আপনার মততাপুত না হয় তবুও হতাশ হবেন না এবং লেখাটি কেটে না দিয়ে সাথে লাল কলম রাখবেন এবং এক পৃষ্ঠা লেখা পূর্ণ হলে প্রতিটি লাইন গভীর ভাবে দেখবেন এবং প্রতিটি লাইনে কমপক্ষে তিন বা চারটি স্থান নির্বাচন করে সেখানে লেখার ওপর বৃত্ত এঁকে চিহ্নিত করবেন এবং সাথেই হরফটি পুণরায় সংশাধেন করে লিখবেন। আঁকা-বাঁকা টান ও ভাজগুলাে যথাযথ ভাবে লিখবেন। এভাবে পুরাে পৃষ্ঠাটি সংশাধেন করার আগে দ্বিতীয় পৃষ্ঠা লেখা শুরু করবেন না।

৩. লেখার সময় হাতের উপর চাপ প্রদান থেকে বিরত থাকা :
অনেক সময় আমরা লেখার ক্ষেত্রে আমাদের হাতের উপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করে থাকি। তখন আমাদের হাতের লেখার মধ্যে তারতম্য দেখা দেয়। তাই লেখার সময় হাতে চাপ প্রয়োগ কম করবে-এতে লেখা সুন্দর হবে। যথাসম্ভব লেখার মধ্যে বিরতি না দিয়ে এক মজলিসেই লেখাটি সমাপ্ত করার চেষ্টা করুন। কলমের মাথার সায়ো ইঞ্চি ওপরে ডান হাতের শাহাদাত, মধ্যমা ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা কলমটি স্বাভাবিকভাবে ধরুন। মনে রাখবেন আপনার কলম ধরার ভঙ্গি যত সুন্দর হবে তত দ্রুত আপনার লেখা সুন্দও হতে থাকবে।

৪. লেখার ক্ষেত্রে হাত ও কনুই নমনীয় রাখা:
আপনি যে পেপারে লিখেন না কেন, লিখার সময় অবশ্যই আপনার হাত এবং সেই সাথে আপনার কনুই এমনভাবে রাখতে হবে, যাতে হাত কিংবা কনুই এর উপর অতিরিক্ত চাপ না পরে। চাপ পড়লে লেখা খারাপ হতে পারে।

৫. তুলনামূলক ধীরগতি অবলম্বন করা:
অনেক সময় দ্রুত লিখতে গিয়ে অনেকেরই লেখা খুব খারাপ হয়ে উঠে। তাই, তুলনামুলক সময় মেনে চলে ধীরে ধীরে লিখলেই লেখা সুন্দর হয়ে উঠবে। অভিজ্ঞদের মতে, ‘এটি রপ্ত করার জন্য আপনি একটি কলম ধরে কল্পনায় (বাতাসের ওপরে) বড় বড় অক্ষর লিখতে পারেন।’

৬. অঙ্গবিন্যাস ঠিক করা :
সোজা হয়ে বসুন এবং আপনার অনভ্যস্ত হাতটিকে (যেমন ডানহাতিদের ক্ষেত্রে বাঁ হাত) কাগজ বা খাতাটিকে ধরে রাখার জন্য ব্যবহার করো। হুপার বলেন, ‘লেখার সময় আমি আমার অনভ্যস্ত হাতটিকে সামঞ্জস্য রক্ষার্থে ব্যবহার করি। এটা আমাকে স্থির থাকতে এবং ডান হাতের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে সাহায্য করে।’ তবে এজন্য অবশ্যই চেয়ার-টেবিল ব্যবহার করা উত্তম। অক্ষরকে সুন্দরভাবে রূপ দিতে প্রথমে বড় বড় করে লেখার অভ্যাস করুন। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক লেখার স্টাইল ছোট আকারে হ্রাস করুন।

৭. অনুশীলন, অনুশীলন এবং অনুশীলন :::
হাতের লেখা ভালো করার জন্য অনুশীলনের কোনো বিকল্প নেই। উপরোক্ত নিয়মগুলো মেনে আপনি যত বেশি অনুশীলন করবেন ততই দক্ষতা বাড়বে। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ এক সময় আপনাকে একজন সু-লেখক বানিয়ে দিবেনই। লেখা শুরু করার পূর্বে কোন দিন বিসমিল্লাহ… বলতে ভুলবেন না এবং চেষ্টার সাথে সাথে তালব-ই-এলমদের জন্য আল্লাহ তাআলার দরবারে একান্তভাবে দুআ করা আবশ্যক। ওমা তাওফীকী ইল্লাবিল্লাহ।

বসার স্থান ও খাতা রাখার জন্য একটি সুন্দর জায়গা নির্বাচন করে ধীর-স্থরতার সাথে লেখা শুরু করুন। যথাসম্ভব লেখার মধ্যে বিরতি না দিয়ে এক মজলিসেই লেখাটি সমাপ্ত করার চেষ্টা করুন। কলমের মাথার সায়ো ইঞ্চি ওপরে ডান হাতের শাহাদাত, মধ্যমা ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা কলমটি স্বাভাবিকভাবে ধরুন। মনে রাখবেন আপনার কলম ধরার ভঙ্গি যত সুন্দর হবে তত দ্রুত আপনার লেখা সুন্দর
হতে থাকবে। এবার গভীর ভাবে একটি অক্ষর কিংবা বাক্য লেখার জন্য কমপক্ষে পাচ মিনিট মূল লেখাটি সামনে রেখে ভাবুন যে, লেখার শুরু কেমন, শেষ কেমন এবং লেখার মধ্যবর্তী ভাঁজগুলাে সাজো আঁকা বাকা তা দেখুন। আরাে লক্ষ্য রাখুন লেখার ঢং সাজো না বাঁকা। যদি বাঁকা হয় তাহলে বেঁকে যাওয়া দিকটি ডানের দিকে নমিত না বাম দিকে নমিত তা লক্ষ্য রাখুন। একটি হরফ বা জুমলা লেখার জন্য তিনবার লিখে একবার ভাববেন না; বরং তিনবার ভেবে একবার লিখবেন ।

প্রথম সপ্তাহ দ্রুত লেখার প্রতি মনাযোগেী না হয়ে ধীরে ধীরে লেখার চেষ্টা করবেন। এর পর দ্বিতীয় সপ্তাহে আগের তুলনায় কিছুটা দ্রুততার সাথে অনায়াসে লেখার চেষ্টা করবেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় পূর্বেরচে পরের সপ্তাহের লেখাটি তুলনামূলক অসুন্দর দেখা যায়, এতে আশাহীন হওয়ার কোনাে কারণ নেই; বরং আপনি প্রতিদিন নিয়ম করে লিখতে থাকবেন। যদি দু’এক দিন কোনাে কারণ বশত লিখতে না পারেন তাহলে দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিন ছুটে যাওয়া দিনের লেখাগুলাসেহ সে দিনের লেখা একসাথে লিখবেন। এতে একটু কষ্ট হলেও বিরক্তিবাধে করা যাবে না। অনুশীলনের ক্ষেত্রে চেষ্টা করবে যাতে আপনার লেখাটি কোনাে সত্য কথা, সুন্দর উপমা বা কুরআন হাদীসের কোনাে কথার সাথে মিলে যায়। কখনাে আপনার কলম দ্বারা যেন অরুচিকর বা অসুন্দর কোনাে কথা লেখা না হয় সে বিষয়ে জীবনের শুরু থেকেই বদ্ধপরিকর থাকবেন।

 

  • হাদীসে পাকে নবীজী (সঃ) ইরশাদ করেন, প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য ইলমে দ্বীন শিক্ষা করা ফরজ।
  • হাদীসে পাকে নবীজী (সঃ) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ইলমে দ্বীন শিক্ষা করার জন্য কোন রাস্তা অবলম্বন করে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য জান্নাতের রাস্তা সহজ করে দিবেন।
  • হাদীসে পাকে নবীজী (সঃ) ইরশাদ করেন, ইলমে দ্বীন শিক্ষাকারীর জন্য সমুদ্রের মাছ, গর্তের পিপিলিকা ও সমস্ত প্রাণীকুল দোয়া করে।
  • আল্লাহ্ রাবুল আলামীন কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেন, হে মুমিনগণ! তোমরা যদি আল্লাহর দ্বীনের সাহায্য কর, তাহলে তিনিও তোমাদের সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পদদ্বয়কে দ্বীনের উপর সুদৃঢ় করে দিবেন। (অর্থাৎ দ্বীনের উপর চলা ও দ্বীন নিয়ে কাজ করা সহজ করে দিবেন)।
    ক্স হাদীসে পাকে নবীজী (সঃ) ইরশাদ করেন-‘‘হয় তুমি আলেম হও, না হয় মুতায়ালিম (শিক্ষার্থী) হও, না হয় দ্বীনের সাহায্যকারী হও’’। (কানজুল উম্মাল)
  • হাদীসে পাকে নবীজী (সঃ) ইরশাদ করেন-তোমরা কুরআনের ধারক বাহককে সম্মান কর। নিশ্চয়ই যে কুরআনের ধারক বাহককে সম্মান করল। বেশ্ক সে আমাকে সম্মান করল।

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০