মানবাধিকার

যে কারণে গুম হয়েছিলেন আসলাম চৌধুরী

নবাব সালেহ আহমদ, বিশেষ সংবাদদাতা ::

মোঃ আসলাম চৌধুরী কে :  মোঃ আসলাম চৌধুরী (জন্ম তারিখ ঃ ০৪.০৪.১৯৬৬ এবং এনআইডি নং-২৬৯৬৪০৬৬৯১৬১৫, পিতা-নূরুল আবছার চৌধুরী, মাতা-কহিনুর বেগম, ভাইস চেয়ারম্যান, সেন্টার ফর হিউম্যান রাইট্স মুভমেন্ট, সাং-৮৯/১, কাকরাইল, দ্বিতীয় তলা, রমনা, ঢাকা-১০০০ এবং স্থায়ী ঠিকানা ঃ বাড়ী-০৪, রোড নং-৮, বøক-সি, সেকশন-০৬, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬, পেশা-ব্যবসা, জাতীয়তা বাংলাদেশী।

গুমের ঘঠনার কারণ : আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইট্স মুভমেন্ট এর পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে সুন্দরবনের পাশে ভারত-বাংলাদেশের রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিলের জন্য একাধিক রিট পরিলাচলনা করে। শুধুতাই নয় সকল ধরণের কয়লা ক্ষতিকর বিষয়ক জন সচেতনামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা চলছিল জোরালো ভাবে। ২০১০ সালে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টে ১২১২ নং রীট মামলা চলাকালীন সময়ে  সংস্থার চেয়ারম্যান প্রয়াত প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সেলিম ভূইয়া কে ডিজিএফআই অফিস থেকে ডেকে নিয়ে যায়, অতঃপর আর কোন দিন সেন্টার ফর হিউম্যান রাইট্স মুভমেন্ট এবং সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের কোন কর্মকান্ডে জড়িত থাকবে না এই মর্মে মুচলেকা এবং এ সকল সংস্থা থেকে পদত্যাগে বাধ্য হয়। এমন নাজুক পরিস্থিতিতে বাগেরহাট জেলা রামপাল উপজেলা নিবাসী তৎকালীন মহাসচিব বর্তমান নির্বাহী প্রধান লায়ন ড. মোঃ মোজাহেদুল ইসলাম মুজাহিদ এবং বাড্ডা ল’ কলেজের প্রয়াত অধ্যক্ষ এডভোকেট শেখ সিদ্দিক আহম্মদ নেতৃত্বে সংঘঠন জীবনের মায়া ত্যাগ করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে রিট মামলা পচিালনার জন্য কমিটি করা হয়। উক্ত কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন মোঃ আসলাম চৌধুরী।

আরো উল্লেখ্য যে আমাদের সংস্থার প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি মোঃ আরায়েস উদ্দিনের পরামর্শে এবং বাংলাদেশ সূপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ড. মোঃ জিয়াউর রহমান, এডভোকেট মনজিল মোর্শেদ, এডভোকেট শেখ তাহসিন আলী, ব্যারিস্টার শেখ মোঃ জাকির হোসেন এবং এডভোকেট ড. মোঃ হাসিনুর রহমান, এডভোকেট মিজানুর রহমান মুকুল প্রমূখকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।  ড. মোঃ মোজাহেদুল ইসলাম মুজাহিদ এর নেতৃত্বে একাধিক বার সুন্দরবন, রামপাল কয়লা ভিক্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় আমাদের টীম গমন করে। এ সকল দলের সাথে ছিলেন পরিবেশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এম. এ. সাত্তার, কৃষি বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মোঃ সদরুল আমিন, বীরমুক্তিযোদ্ধা ড. আব্দুল মালেক গাজী, এডভোকেট আজিজুল হক, এডভোকেট আলেয়া রাহাত, এডভোকেট ফেরদাউসী, এম.এম মিজানুর রহমান, নবাব সালেহ আহম্মদ, শাহিনা আক্তার পারু, ডাঃ হাবিবুর রহমান, রাজিয়া সুলতানা স্মৃতি প্রমুখ। ২০১১ সাল থেকে স্বৈর সরকারের পক্ষে আমাদের উপরে চলে যুলুম অত্যাচার, নির্যাতন ও মামলা-হামলা। এত কিছুর পর আমাদেরকে থামানো যাচ্ছে না, তখন আমাদের উপরে চলে অত্যাচারের চরম স্টীম রোলার। পর্য্যায় ক্রমে আমাদের মধ্যে যাদের অর্থবৃত্ত এবং ব্যবসা বানিজ্য ছিল তাদের প্রতি চলে নির্যাতন।

যে দিন গুম হলেন মোঃ আসলাম চৌধুরী : মোঃ আসলাম চৌধুরী বিগত ২৩/০৩/২০১৫ইং তারিখ সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিট,  সোমবার সংস্থার নিয়মিত মিটিং শেষে কাকরাইল মোড় থেকে তার  ব্যক্তিগত গাড়ীতে (ঢাকা মেট্রো-গ ১৯-১৬৫৩) উঠার প্রাক্কালে সামনে র‌্যাবের পরিচয়ে কতিপয় আফিসার তাকে গাড়ীতে তুলে কালো ক্যাপ দ্বারা মাথা-মুখ মন্ডল ঢেঁকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। মুখমন্ডল কালো জমটুপি সরিয়ে নিলে তিনি  র‌্যাবের কর্মকর্তা কমান্ডার মোঃ সোহায়েল আহমেদকে চিনতে পারেন এবং জানতে পারেন এটা র‌্যার-১ কার্যালয়। ঐ সময়ে তিনি আরো দেখতে পান র‌্যাবের পোশাক পরিহিত নাম না জানা আরো অনেকে।

তার সাথে থাকা মানিব্যাগ, মোবাইল, এনআইডি এবং সংস্থার কার্ড তারা নিয়ে রেখে আনুমানিক ১/২ ঘন্টা পরে তাকে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে একটা অন্ধকার ঘরে আটকিয়ে রেখে র‌্যাবের কর্মকর্তা কমান্ডার মোঃ সোহায়েল আহমেদ মুক্তিপন হিসেবে ১০ কোটি টাকা দাবী করে। মুক্তিপনের ১০ কোটি টাকা দিতে অস্বীস্কার করিলে তাকে শারিরীকভাবে নির্যাতন করে এবং বেদম প্রহার করে। অতঃপর ৩/৪ দিনে তার নিজ নামীয় স্টান্ডার চার্টাট ব্যাংক ও এনসিসি ব্যাংক গুলশান শাখা হইতে মুক্তিপন বাবদ ৩ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা দেওয়ার ১ মাস ১৭ দিন পরে আনুমানিক ভোর ৫.০০ টার সময় তাকে মিরপুর ভেড়িবাঁধ এলাকায় ছেড়ে দেয় এবং উক্ত ঘঠনা প্রকাশ বা জানাজানি করিলে তিনি সহ পরিবারের সবাইকে জীবনের তরে শেষ করে দিব বলে হুমকী প্রদান করে। তার এবং পরিবারের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তিনি দেশে-বিদেশে পালিয়ে বেড়ান।  পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন তাকে আঁটকিয়ে রাখা হয়েছিল আয়না ঘরে।

যাদের প্রত্যক্ষ মদদে গুম (১) কমান্ডার মোঃ সোহায়েল আহমেদ, র‌্যার প্রধান, (২) ড. তৌফিক-ইলাহী, পিতা-মরহুম সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক জ¦ালানী উপদেষ্ঠা, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, (৩) মোঃ আকবর হোসেন, সাবেক, ডিজিএফআই প্রধান, (৪) মোঃ মোয়াজ্জম হোসেন, পিতা-মৃত. শেখ আমিন উদ্দিন, চেয়ারম্যান, রামপাল উপজেলা, বাগেরহাট. (৫)  মোঃ রফিকুল লিটু মৃধা, সাবেক সভাপতি, গোপালগঞ্জ জেলা যুবলীগ, পিতা-মৃত. মোঃ সিরাজুল ইসলাম, সাং-মহেশপুর, কাশিয়ানী, গোপালগঞ্জ, (৬) ইকবাল হোসেন সবুজ, পিতা-মরহুম ইসলাইল হোসেন বাগমার, সাবেক এমপি, গাজীপুর-০৩, (৭) সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাবেক ভ’মি মন্ত্রী, (৮) নুর ই আলম মিনা, সাবেক ডিআইজি, (৯) সরওয়ার কমল, সাবেক এমপি, কক্সবাজার-০৩, (১০) মোঃ জসিম উদ্দিন, পিতা-মুজবুল হক, উপজেলা চেয়ারম্যান, মিরসরাই, চট্টগ্রাম , (১১) মনিরুল ইসলাম ইছা, পিতা-অজ্ঞাত, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা , মিরসরাই, চট্টগ্রাম, (১২) মিজানুর রহমান, পিতা-আব্দুর রাজ্জাক মেম্বর, কেরানীগঞ্জ ছাত্রলীগ,  (১৩) মোহাম্মদ হোসেন, সাবেক ডিজি, পাওয়ার সেল, এবং র‌্যাবের অনেক সদস্য।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১৩১৫১৬১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭৩০