লোকসভা ভোটের সপ্তম অর্থাৎ শেষ দফার দিন পশ্চিমবঙ্গের ৯ কেন্দ্রের মধ্যে বাড়তি নজর ছিল বসিরহাটের দিকে। শুক্রবার রাত থেকেই সিঁদুরে মেঘ দেখছিলো সন্দেশখালি। রাতের অন্ধকারে কেউ বা কারা ঘরে ঘরে ঢুকে শাসাচ্ছিল বলে অভিযোগ নারীদের । শনিবার ভোটের সকালে দেখা গেল যথারীতি সন্দেশখালির কয়েকটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে রাজনৈতিক অশান্তি। বয়রামারিতে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে গেল! ভাঙচুর হল বাইক, মাটিতে লুটিয়ে পড়ল বিজেপির দলীয় পতাকা। গোটা ঘটনায় অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। বসিরবহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রর দাবি, সন্দেশখালিতে তৃণমূল অশান্তি বাঁধানোর চেষ্টা করছে। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশের বিরুদ্ধে ইট ছোড়ার, লাঠিচার্জের অভিযোগ। সন্দেশখালির নারীরা সংবাদমাধ্যমকে জানান, দশ বছর তাঁরা শেখ শাহজাহান ও তাঁর ভাইয়ের দলবলের জন্য ভোট দিতে পারেননি। কিন্তু এখন শাহজাহান জেলে।
তবে আতঙ্ক কিছু পিছু ছাড়েনি তাঁদের। অভিযোগ এখনও শাহজাহানের ভাই সিরাজ নারীদের হেনস্থা করছেন। শুধু তাই নয়, পুলিশের পোশাক পরে নোংরা কথা বলছেন মেয়েদের উদ্দেশ্যে। সন্দেশখালির পুনরাবৃত্তি ক্যানিংয়ে। বিজেপি কর্মীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
মুর্শিদাবাদের ডোমকলে তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলরের বাড়িতে বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে ভোটের দিন। মুর্শিদাবাদের ডোমকল পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হারুরপাড়ায় বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিল নুরাবুল ইসলামের বাড়িতে বোমাবাজি করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় বাম ও কংগ্রেসের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন প্রাক্তন কাউন্সিলর।
যাদবপুরে বাকি এলাকায় ভোট ভালোভাবে হলেও সকাল থেকেই অশান্তির খবর আসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় থেকে। এমনটাই জানালেন যাদবপুরের বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, একাধিক জায়গায় ভোটারদের ভয় দেখানো হচ্ছে। বিশেষত, হিন্দু ভোটারদের ভয় দেখানো হচ্ছে। অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এবার একটা নতুন প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে। হিন্দুরা যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ, সেখানে তাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা চলছে। তাঁরা যাতে ভোট দিতে বেরোতে না পারেন। সেই চেষ্টা চলছে।” বারুইপুর পূর্ব থেকেও অশান্তির খবর আসছে বলে দাবি করেছেন তিনি। বিজেপি প্রার্থী আরও বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে ভোটের একটা নেগেটিভ মডেল তৈরি হয়েছে। হুমকি-পেশী শক্তি দিয়ে সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে। সম্প্রদায় চিহ্নিত করে সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে।
ভোটের আগের দিন রাত থেকেই উত্তপ্ত ছিল ভাঙড় । সকালে ভোটগ্রহণ শুরু হতেই ফের নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল সেখানে। ভাঙড়ের নলমুড়িতে আইএসএফ-তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। ঘটনায় দুপক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। মাথা ফাটে একাধিক জনের। জানা গিয়েছে, ভোটের শুরুতে বুথ এজেন্ট বসানোকে নিয়ে বচসার সূত্রপাত। সেই বচসা-ই তারপর হাতাহাতিতে গড়ায়। ব্যাপক ঝামেলা বাধে। দুপক্ষ-ই দুপক্ষকে মারধর করে। এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের ৭ জন আহত হন। পুলিশ পৌঁছালে পুলিশকে ঘিরে ধরেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন আইএসএফ সমর্থকরা। আহত হন আইএসএফ নেতা রাহুল মোল্লা সহ বেশ কয়েকজন। ঘটনাস্থল থেকে ৪ আইএসএফ কর্মীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
ভোট দিয়ে ফেরার পথে হেনস্থার শিকার টলিউডের চিত্র পরিচালক অনীক দত্ত। কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের ভোটার তিনি।
Add Comment