আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির মঞ্চে বাংলাদেশি জোবায়েদা

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে আরেকটি আলোচিত নাম এখন মেরি জোবায়েদা। যিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। লেখাপড়া করতে ৯/১১ এর পরপরই যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন। ধীরে ধীরে সক্রিয় হন রাজনীতিতে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বক্তৃতায় অনুপ্রাণিত হয়ে যুক্ত হন ডেমোক্রেটদের সঙ্গে। তিন সন্তানের মা এবার হতে চান  নিউইয়র্ক সিটির স্টেট অ্যাসেম্বলি’র পরবর্তী সদস্য।

নিউইয়র্ক শহরের পিপলস রিপাবলিক অব অ্যাস্টোরিয়া নামে পরিচিত ডানপন্থা-বিরোধী এলাকায় ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট নেতা জোহরান মামদানি এখন মেয়র হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে। যদি তিনি সত্যিই গ্রেসি ম্যানশনে উঠে যান, তবে তার অ্যাসেম্বলি আসন শূন্য হবে,আর  সেইখানেই নিজেকে অধিষ্ঠিত করতে চান জোবায়েদা।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি জোহরানের স্থানে কখনোই লড়তাম না। তবে আমরা প্রগতিশীল নেতৃত্ব চাই। তিনি মনে করেন এটা যেন আল্লাহরই পরিকল্পনা ছিল, আর জনগণের গ্রহণযোগ্যতাও মিলেছে। কারণ, দুই বছর আগে আসনপুনর্বিন্যাসের ফলে এই এলাকা জোবায়েদার বসবাসের মধ্যে পড়ে গেছে।

গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র, অভিবাসন ও মূল্যবোধে উজ্জীবিত জোবায়েদা নিজেকে ডেমোক্রেটিক সোশালিস্টস অব আমেরিকার (ডিএসএ) সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন। অভিবাসীদের পক্ষেও দাঁড়াতে চান এই নারী। তার স্বপ্ন- সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক ও ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক, প্রি-কে এবং গণপরিবহন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা। তিনি বলেন, এটা অর্থের অপচয়, সম্পদের অপচয় এবং মানুষের জন্য ক্ষতিকর। খাদ্য চুরির জন্য কাউকে গ্রেপ্তার করা বাস্তব সম্মত নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। সকল ক্ষুধার্তের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জোবায়েদা।

নিউইয়র্ক শহরের আইন অনুযায়ী, যদি মামদানি ১ জানুয়ারি মেয়র হিসেবে শপথ নেন, তবে গভর্নর ক্যাথি হোচুল ১১ জানুয়ারির মধ্যে বিশেষ নির্বাচনের ডাক দেবেন। এই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট, রিপাবলিকান ও ওয়ার্কিং ফ্যামিলিজ পার্টিসহ সব পক্ষই প্রার্থী দিতে পারবে। কুইন্স ডেমোক্র্যাটরা চাইতে পারে মামদানির তুলনায় অপেক্ষাকৃত মধ্যপন্থী কাউকে। কিন্তু মেরি জোবায়েদা ইতিমধ্যেই মাঠে নেমে পড়েছেন। ডোনার খোঁজা, স্বেচ্ছাসেবক জোগাড়, দরজায় দরজায় প্রচার চালানো শুরু করেছেন।

জোবায়েদার বয়স আনুমানিক ৪৫ বছর। জন্ম  বাংলাদেশে। তবেএখানে তার জন্মনিবন্ধনের কোনো রেকর্ডও নেই। ৯/১১ এর পরপরই যুক্তরাষ্ট্রে যান। এরপর নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে স্কলারশিপে ভর্তি হন। রাজনীতিতে হাতেখড়ি ২০০৭ সালে বারাক ওবামার প্রচারণায়। এরপর কাজ করেছেন বিল থম্পসনের মেয়রাল প্রচারণাতেও। শিক্ষক হিসেবে পাবলিক স্কুলেও পড়িয়েছেন।

২০২০ সালে তিনি কুইন্সের ৩৭ নম্বর আসনে ক্যাথি নোলানের বিরুদ্ধে প্রাইমারিতে লড়েন। মাত্র ১৫০০ ভোটে হেরে যান। মামদানির জয়ের পর, নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা তার দরজায় এসে বলেছেন, আপনি চুপ করে বসে থাকতে পারবেন না, আপনাকেই দাঁড়াতে হবে।

জোবায়েদা বলছেন, আমি বিশ্বাস করি এই বিশেষ নির্বাচন আমার জন্যই হচ্ছে। আমি জিতব-এটা নিশ্চিত। তবে সমালোচনার চোখও আছে তার প্রতি। কুইন্স ডেমোক্র্যাট পার্টি বা ওয়ার্কিং ফ্যামিলিজ পার্টি এখনো জানায়নি তারা জোবায়েদাকে সমর্থন দেবে কি না। এমনকি সাবেক বস জেসিকা রামোসের হয়ে ভোট দেবেন কি না, সেটাও এখনও স্থির করেননি। তবু তিনি আশাবাদী। সম্প্রতি সীমান্তে বন্দুকধারীর গুলিতে একজন অফিসার নিহত হওয়া ও ইমিগ্রেশন দপ্তরের কড়া অবস্থানের মধ্যে জোবায়েদা বলেন, এটা যেন প্রসববেদনার মতো, শিশুর জন্মের আগে যেমন কষ্ট হয়, আমরাও তেমন এক কঠিন সময় পার করছি। কিন্তু আমি আশাবাদী। সামনেই আমরা দেখতে যাচ্ছি এক নতুন, সুন্দর আমেরিকা।

সূত্র: পলিটিকো

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
৩১