সারাদেশ

মায়ের ইন্তিকালের পর ৬ মাস পর ৩ নাবালক রেখে মারা গেলেন পিতা :: অতঃপর বড় কন্যার লাশ

রুকুনুজ্জামান (রায়পুরা), নরসিংদী ::

বিষময় ২০২০-এর শেষ দিন, কোভিড-১৯, করোনা ভাইরাসের থাবা নয়, সম্পত্তির জেরে প্রান দিতে হল অষ্টম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী নাবালিকা কন্যা ১২ বৎসরের সুমাইয়াকে । দারিদ্রতা ও খুঁটির জোর না থাকায় মিডিয়া কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি এমন মার্মান্তিক হৃদয় বিদায়ক ঘটনাটি।

ঘঠনাটি ঘঠেছে-নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার টুকেরপাড়া গ্রামে।  একটি ছোট মিষ্টি পরিবারে পরপর জন্ম নেয় ৩ আদম সন্তান। এই ৩ নাবালক/নাবালিকা সন্তানের জন্মদাত্রী মাতা জাহানারা বেগম ঢাকার কেরাণীগঞ্জের নুরমোহাম্দ শেখের একমাত্র কন্যা। জাহানারা বেগমের পৈত্রিক সম্পত্তিতে সুখে শান্তিতে বসবাসরত ছিল প্রায় ১৪/১৫ বৎসর। জাহানারা বেগম ১১ বৎসরের কন্যা সুমাইয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে স্বামীর বাড়ীতে বসবাসের জন্য পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে স্বামীর বাড়ী সুন্দর একটি ২ রুমের টিনের বাড়ী তৈরী করেন। তাদের বড় কন্যা সুমাইয়াকে স্থানীয় টুকেরপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভত্তি করালেন। ছোট ২ বাচ্চাকে বুকের মাঝে আটকিয়ে স্বপ্ন দেখতে থাকলেন, মেয়ে বড় হবে, লেখাপড়া শিখবে পৃত্রি পরিচয়ে  উপযুক্ত সময়ে বিবাহ দিয়ে জামাই পুত্র সবাই নিয়ে আরো বেশী সুখ শান্তিতে দিন কাটাবে কিন্তু বিধির বিধান ঠেকায় কে?

এই মিষ্টি পরিবারের মা নামক প্রানী কাউকে কিছু না জানিয়ে ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে। প্রান প্রিয় স্ত্রীকে হারিয়ে পরিবারে কর্তা ব্যক্তি অসহায়ের মতো দিক বিদিক ছুটঁতে থাকলেন। শেষ পযন্ত  ৩ বৎসরের নাবালক পুত্র আশরাফুল ইসলাম, ৯ বৎসরের নাবলিকা কন্যা নবলী আক্তার এবং ১৩ বৎসর বয়সী সুমাইয়া আক্তারকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ী কেরাণীগঞ্জে উঠলেন। বাঁচ্ছাদেরকে তাঁদের নানীর কাছে কাজে বের হতেন। বিপদের পর আবার বিপদ শুরু হলো করোনার করাল গ্রাসে চাকুরীচুত হলেন তিনি। বেঁচে থাকার আশায় আবারও গ্রামের বাড়ী টুকেরপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। দুঃভাগ্যে আপন ভাইদের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়লেন তিনি। নভেম্বর মাসে তিনি স্ত্রীর পথ ধরে ৩ নাবালক/নাবালিকা সন্তানদের কে শোক সাগরে ভাসিয়ে মারাত্মক ডায়বেটিকস রোগে আক্রান্ত হয়ে চিরদিনের জন্য না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন।

অবুঝ নাবালক নাবালিকা পুত্র কন্যাদ্বয় নানীর কাছে আশ্রয় নিলো। বড় বোন সুমাইয়া আক্তার ২ ভাই বোনের মাতা পিতার দায়িত্ব গ্রহণ করল। নানীর পরিবারে থেকে করোনা কালীন বেঁচে থাকার চেষ্টা অব্যহত রেখে ছিল। এরই মধ্যে বাবার ইন্তিকালের ৪০ দিন অতিবাহিত হতে যাচ্ছে , সে কারণে বাবার আপন ভাই ছোট চাচা মাসুদ মিয়া সুমাইয়ার নানীকে ফোন করে জানাল-আমাদের ভাইয়ের চল্লিশা করব। সুমাইয়াদের পাঠিয়ে দিন। নানী সুমাইয়া আক্তারকে খুব ভালবাসতেন সে কারণে যাবার আগে একটি মোবাইল ফোন কিনে দিয়ে বললেন সব সময় আমাকে ফোন করবে। কিনতু বৎসরের শেষ দিনটি ৩০.০১২.২০২০ইং তারিখের পর তার কন্ঠটি চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে গেল………………………..

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০
১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭৩০৩১