সারাদেশ

ভারত থেকে ভেসে আসা কাঠের গুঁড়ি :: তিস্তা নদীর ৮ কিলোমিটার জুড়ে

সুন্দরগঞ্জ গাইবান্ধা প্রতিনিধি 

উজান থেকে নেমে আসা পানির প্রবল স্রোতে ভারতের দিক থেকে তিস্তা নদীপথে ভেসে আসছে বড় বড় শুকনো কাঠের গুঁড়ি ও ডালপালা। এসব কাঠ নদীর পাড়ে আটকে পড়লে, তা সংগ্রহ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন তিস্তা নদীর দু’ধারের মানুষজন। স্থানীয়ভাবে এসব কাঠ ব্যবহারের পাশাপাশি তা বিক্রিও করছেন অনেকে।

আর এ ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর পশ্চিম ধারে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাইলকে মাইল বিস্তীর্ণ এ কাঠগুলো ভাসছে নদীতে। সববয়সী হাজার হাজার নারী-পুরুষ সংগ্রহ করছেন এ কাঠের গুঁড়িগুলো। কারো হাতে কোটা, কারো হাতে রশি, আবার কেউবা নৌকায় চড়ে সংগ্রহ করছেন। তৎক্ষনাৎ আবার ঘোড়ার গাড়ি, কাকড়া, ট্রলিসহ বিভিন্ন মালবাহী গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছেন। সবমিলিয়ে মনে হয় নদীর ধারে যেনো কাঠ সংগ্রহের মহা উৎসব চলছে।

এ বিষয়ে কথা হয় কাঠ সংগ্রামের কাজে ব্যাস্ত মো. নজরুল ইসলামের (৪৩) সাথে। তিনি বলেন, কি আর বলবো ভাই। হরিলুট কারবার। যে যা পাচ্ছে তাই দখল করছে। আমি একাই ঘন্টা দুয়েক কাজ করেছি। তাতে মনে হয় ৫০ থেকে ৬০ মণ কাঠ সংগ্রহ করেছি। তিনি আরও বলেন, এ কাঠগুলো দিয়ে নৌকা, ঘরের আসবাবপত্র ও জ্বালানি হিসেবে ব্যাবহার করা যাবে। তার বাড়ি চন্ডিপুর ইউনিয়নে।

কাপাসিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. চান মিয়া বলেন, ‘যে পরিমাণে কাঠের গুঁড়ি এসেছে তাতে তিস্তা নদীর পশ্চিম পাড়ের লোকজনদের আসবাবপত্র ও খড়ির অভাব শেষ। তিনি আরও বলেন, ভারত থেকে এগুলো ভেসে আসছে। কাঠগুলোর সাইজ দেখে মনে কোনো ছ’মিলের কাঠ। আবার কোনগুলো মনে হয় বনেজঙ্গলের। যে বনজঙ্গলে বুনো হাতি আক্রমণ করেছিলো।’

 

কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনজু মিয়া বলেন, ‘উজান থেকে সকাল ১১ টার দিক থেকে বিপুল পরিমাণে এ কাঠগুলো ভেসে আসছে। তিস্তা নদীর কাপাসিয়া ইউনিয়নের প্রায় ৮ কিলোমিটার অংশ জুড়ে এ কাঠগুলোর অবস্থান। আসার পর থেকেই এগুলো সংগ্রহ করছেন কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ হাজার নারী-পুরুষ। কাপাসিয়া ছাড়াও হরিপুর, চন্ডিপুর ও শ্রীপুর ইউনিয়নসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের লোকজন এসেছেন কাঠ সংগ্রহের কাজে। সারাদিন তারা কাঁকড়া, ভ্যান, ঘোড়ার গাড়ি ও ট্রলিসহ বিভিন্ন মালবাহী গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ নিজের কাজে ব্যাবহার করবেন আবারও কেউবা বিক্রি করছেন। এখন পর্যন্ত (বিকেল ৫টা) কাঠ ভেসে আসতেছে। তবে পরিমাণে খুব কম।’

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা বন বিভাগের (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান বলেন,  ‘এ ভাবে কাঠ সংগ্রহ করার বিষয়টি কতোটা বৈধ বা অবৈধ সে বিষয়ে আমার ভালো ধারণা নেই।’

এ বিষয়ে কথা হয় গাইবান্ধা জেলা বন কর্মকর্তা এ এইচ এম শরিফুল ইসলাম মন্ডলের সাথে। তিনি বলেন, ‘ভেসে আসা কাঠগুলো এভাবে সংগ্রহ করা ঠিক হয়নি তাঁদের। নদীপথ প্রশাসনের। তারা পদক্ষেপ নিলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারবো।’

এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাসের সাথে। তিনি বলেন, ‘নদীতে কাঠ ভেসে আসার বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানলাম। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১