বিতর্কিত নির্বাচনে শতকরা প্রায় ৯৮ ভাগ ভোট পেয়ে তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন সামিয়া সুলুহু হাসান। নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের অংশগ্রহণে বাধা দেয়া হয়। এ জন্য এ নির্বাচন অধিক পরিমাণে বিতর্কিত। এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি বলছে- শনিবার নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে হাসান ৯৭.৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। প্রতিটি নির্বাচনী কেন্দ্রেই সব প্রতিদ্বন্দ্বীকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। শনিবারই তার শপথগ্রহণ নেয়ার কথা। প্রধান বিরোধী দল চাদেমা’কে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বাধা দেয়া হয়। দলটির মুখপাত্র জন কিটোকা এই ফলাফলকে ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে খেলার মতো’ আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা চাই একটি বিশ্বাসযোগ্য সংস্থার তদারকিতে একটি নতুন নির্বাচন। প্রশাসনিক রাজধানী ডোডোমা থেকে বিজয়ী হিসেবে স্বীকৃতির পর হাসান বলেন, প্রতিবাদকারীদের কাজ ‘না দায়িত্বশীল, না দেশপ্রেমিক।’ তিনি বলেন, তানজানিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। আমাদের সমস্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যবহার করতে হবে যাতে দেশ নিরাপদ থাকে।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট ও সংসদ নির্বাচনের সময় প্রধান শহরগুলোতে দিনে দিনে সহিংস প্রতিবাদ দেখা দেয়। মানুষ রাস্তায় নেমে হাসানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতিযোগিতায় বাধা দেয়া ও ব্যাপক দমনমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্বাচনের দিনও বিশাল নিরাপত্তা উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও বিশৃঙ্খলা ছড়ায়। কিছু প্রতিবাদকারী হাসানের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে, সরকারি ভবনে আগুন ধরায় এবং পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও গুলি ব্যবহার করে। ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগের সেবা কয়েকটি শহরে নির্বাচনের সময় ও পরে সীমিত করা হয়। চাদেমা শুক্রবার জানায়, সহিংসতায় প্রায় ৭০০ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার কিটোকা বলেন, এ সপ্তাহে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে কমপক্ষে ৮০০ জন নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতর বলেছে, বিশ্বাসযোগ্য রিপোর্ট অনুযায়ী তিনটি শহরে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ থাবিত কম্বো আল জাজিরাকে শুক্রবার বলেন, কর্তৃপক্ষ সঠিকভাবে পদক্ষেপ নিয়েছে এবং নির্বাচন ন্যায্যভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেন, অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করা হয়নি। প্রতিবাদকারীদের নিহতের কোনো সরকারি তথ্য নেই। ৭০০ জনের তথ্য আমি কোথাও পাইনি।
হাসান ২০২১ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট থেকে তার পূর্বসূরী জন মাগুফুলির আকস্মিক মৃত্যুর পর প্রেসিডেন্ট হন। তখন ছোট দলগুলোর ১৬ জন প্রার্থীকে মোকাবিলা করেন। চাদেমার নেতা টুন্ডু লিসু রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে কয়েক মাস ধরে কারাবন্দি। তিনি নির্বাচনে সংস্কারের আহ্বান করেছিলেন। অিন্য বিরোধী নেতা লুহাগা এমপিনা এসিটি-ওয়াজেলেন্ডো দলের হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা পান। অভিযোগ আছে, নির্বাচনের আগে হাসান দেশে ভয়ঙ্কর পরিবেশ সৃষ্টি করেনি। এর মধ্যে উচ্চপ্রোফাইল অপহরণও অন্তর্ভুক্ত। সরকার তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস তানজানিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন তার মুখপাত্র।










Add Comment