এদিকে যাত্রীর চাপ বাড়তে থাকায় ফেরিতে চাহিদার তুলনায় যানবাহন লোড নিতে পারছে না। ফলে উভয় ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাক ও ছোট গাড়ির সংখ্যাও ধীরে ধীরে বাড়ছে।
ঢাকা থেকে আসা বরিশালগামী যাত্রী ইকবাল হোসেন বলেন, ‘কঠোর লকডাউনে পড়লে ঢাকায় থাকা কষ্ট। কাম কাইজ জোটে না। বেকার বইসা থাকতে হয়। তখন একবেলা খাওন তো আর কেউ দেবে না। তাই গ্রামের বাড়িতে যাই। সেখানে থাকলে ঢাকার মতো এত খরচা হইবে না।’
ঢাকা থেকে আসা তরিকুল ইসলাম নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘পুরো দেশ লকডাউন দিলে আমরা কী করে চলব। এ ব্যাপারটাও সরকারের ভাবা উচিত। আমাদেরও তো বউ, পোলা–মাইয়া আছে। ঢাকা থেকে যেখানে বরিশালের ভাড়া ৩০০ টাকা, সেখানে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা চইলা গেছে। পথে পথে দুর্ভোগ। বাস বন্ধ কইরা দিছে, কিন্তু কই মানুষের আসা কি থামাইতে পারল সরকার। শুধু মানুষগুলাকে ভোগান্তি।’
এদিকে জীবিকার তাগিদে এখনো ঢাকায় ছুটছেন শ্রমজীবী মানুষ। একইভাবে অতিরিক্ত ভাড়া আর দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে ঘাটে এসেছেন তাঁরাও। খুলনা থেকে আসা ঢাকামুখী যাত্রী মোবারক হোসেন বলেন, ‘আমি পুরান ঢাকার একটি কারখানায় কাম করি। এক সপ্তাহ আগে গ্রামের বাড়িতে আইসা লকডাউনে আটকা পড়ছি। বাস চলে না। বিপদে পইরা এখন ঢাকায় যাই কামে। গ্রামে বাড়িতে থাকলে তো আর কাম জোটবে না।’
রোববার সকালে বিআইডব্লিউটিসি বাংলাবাজার ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ভজন সাহা বলেন, ‘আমাদের ১৫টি ফেরি চালু আছে। লঞ্চ বন্ধ থাকায় সব যাত্রী ফেরিতে পার হচ্ছে। যাত্রী বেশি থাকার কারণে ফেরিতে চাহিদা অনুযায়ী যানবাহন বেশি লোড নিতে পারছি না আমরা। এ কারণে ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় বেশ কিছু যানবাহন আটকা পড়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে বলা হচ্ছে কিন্তু তারা কেউ তা মানছে না। তারা করোনা বলে কিছুই বিশ্বাস করে না। তবুও আমরা যতটুকু বলার যাত্রীদের বুঝিয়ে বলি। এরপরও না শুনলে আমরা কী করতে পারি?’
সকাল ১০টায় বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) জামালউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাত্রীদের খুব চাপ। ঢাকা থেকে প্রচুর মানুষ আসছে। যাত্রীরা ঘাট থেকে কিছুটা পথ পায়ে হেটে থ্রি-হুইলার ও ভাড়ায় চলা মোটরসাইকেলে করে গন্তব্যে যাচ্ছে। এই যানবাহনগুলো আমাদের নির্দেশনা না মেনে গ্রামের রাস্তার ফাঁকফোকর দিয়ে চলাচল করছে। এদের কোনোভাবেই আটকানো যাচ্ছে না। এরপরও আমাদের ট্রাফিক পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। যাত্রীসহ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, যাত্রীর চাপ বেশি থাকায় বাংলাবাজার ঘাটে দেড় শতাধিক ছোট গাড়ি ও শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক পারাপারের অপেক্ষায় আটকা পড়েছে। শিমুলিয়া ঘাটেও যানবাহনের চাপ বেড়েছে।







 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							
 
							 
							 
							 
							 
			 
			 
			 
			 
			

Add Comment