পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহম্মদ আসিফ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, চীন কাশ্মীর বিরোধে
তৃতীয় পক্ষ হয়ে নয়, সরাসরি পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধ করবে।
তিনি ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, চীন কেবল একটি প্রক্সি যুদ্ধ নয়, পাকিস্তানকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করবে এবং এমনকি সংকটময়
মুহূর্তে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে।

ভারতের হামলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী। স্থানীয় সময় ভোর ৪টায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “ভারতের বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার করে ছয়টি স্থানে মোট ২৪টি আঘাতের খবর পাওয়া গেছে। আমাদের ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়নের ভিত্তিতে, এই ছয়টি স্থানে আটজন পাকিস্তানি নিহত, ৩৫ জন আহত হয়েছেন এবং দুজন নিখোঁজ রয়েছেন।”
তিনি জানান, এসব হামলার লক্ষ্যবস্তুই ছিল বেসামরিক স্থাপনা, যার বেশিরভাগই মসজিদ ছিল। ভারতীয় গোলাবারুদ আশেপাশের আবাসিক কাঠামোরও ক্ষতি করেছে। হামলায় মোট চারটি মসজিদকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরের কয়েকটি শহরে ভারত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী পাল্টা হামলা চালিয়ে ভারতীয় বিমান বাহিনীর (আইএএফ) পাঁচটি যুদ্ধবিমান, একটি ড্রোন এবং ব্রিগেড সদর দপ্তর ধ্বংস করেছে।
“এখানে চারটি হামলা চালানো হয়েছে। এতে পাঁচজন নিরীহ পাকিস্তানি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে তিন বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। ৩১ জন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ এবং ছয়জন মহিলা রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, একটি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছে এবং এর সাথে থাকা চারটি কোয়ার্টার ধ্বংস করা হয়েছে, যেখানে মানুষ বাস করত।
আইএসপিআর মহাপরিচালক বলেন, মুজাফ্ফরাবাদে বিলাল মসজিদকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এখানে সাতটি আঘাতের খবর পাওয়া গেছে। এতে একটি মেয়ে আহত হয়েছে। মসজিদটি ধ্বংস করা হয়েছে।
“কোটলিতে আব্বাত মসজিদকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এখানে পাঁচটি আঘাত লেগেছে এবং দুইজন মারা গেছে। এর মধ্যে একটি ১৬ বছর বয়সী মেয়ে এবং একটি ১৮ বছর বয়সী ছেলে রয়েছে। একজন নারী এবং তার মেয়ে উভয়ই আহত হয়েছেন,” বলেন তিনি।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী আরো জানান, মুরিদকের উমালকুরা মসজিদকে লক্ষ্য করে চারটি হামলা করা হয়েছে। এতে একজন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন, অন্যজন আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় দুজন নিখোঁজ রয়েছেন। একটি মসজিদ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং কুমোরদের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।
“শিয়ালকোট জেলার কোটকি লোহারা গ্রামে দুটি হামলা হয়েছে। একটি ক্ষেপণাস্ত্র ভুলভাবে ছোঁড়া হয়েছে, অন্যটি খোলা মাঠে পড়ে গেছে। কোনও ক্ষতি হয়নি।শাকরগড়ের কাছে কোনও ক্ষতি ছাড়াই দুটি হামলা হয়েছে। একটি ডিসপেনসারিতে সামান্য ক্ষতি হয়েছে,” আরও জানান তিনি।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী নিশ্চিত করেছেন, ভারতীয় বিমান বাহিনীর সাথে সংঘর্ষের পর পাকিস্তান বিমান বাহিনীর সমস্ত যুদ্ধ বিমান নিরাপদে রয়েছে।
বিধ্বস্ত হওয়া ভারতীয় বিমান বাহিনীর (আইএএফ) যুদ্ধ বিমানগুলির মধ্যে তিনটি ফরাসি তৈরি রাফায়েল, একটি এসইউ৩০এমকেআই এবং একটি এমআইজি-২৯ ফুলক্রাম রয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে একজন সামরিক মুখপাত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী নিয়ন্ত্রণরেখার (এলওসি) ধুন্দিয়াল সেক্টরে একটি শত্রু পোস্টও ধ্বংস করার দাবি করেছে। নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তীব্র গুলি বিনিময় চলছে।
এর আগে পাকিস্তানের কোটলি, বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাগ এবং মুজাফ্ফরাবাদ সহ ছয়টি স্থানে ভারত হামলা চালায়।
ভারতীয় অবৈধভাবে অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের (আইআইওজেকে) পহেলগামে পর্যটকদের উপর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর পারমাণবিক-সশস্ত্র দুই প্রতিবেশীর মধ্যে তীব্র উত্তেজনার মধ্যে ভারত এই হামলা চালালো।
Add Comment